সারা দেশে এখন হীম শীতল আবহাওয়া বইছে। শীতে অনেকেই সর্দি,
কাশি, জ্বরে সহ নানা রোগে আক্রান্ত হন। শীতের
বৈরী আবহাওয়ার কারনে আমাদের ত্বকের নানা প্রকার সমস্যা দেখা দেয়। কিছু মানুষের এই শীতে
চর্মরোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। সুস্থ থাকার জন্য ঋতুর এ পরিবর্তনের সাথে সাথে সবাইকে
একটু বাড়তি নজর দিতে হয়। এই সময় বাড়তি সচেতন না হলে অসুস্থতার হার বেড়ে যায়। শীতে বাজারে
অনেক প্রকার সবজি ও সবুজ ফল পাওয়া যায়। কিন্তু এই সময় নানা খাবারের বৈচিত্র্য থাকলেও
খাবারের প্রতি অনাগ্রহ বেশি দেখা দেয়। এই সময় বাইরে থেকে শরীরের যত্নের পাশাপাশি ভেতর
থেকে সুস্থতার প্রয়োজন। শীতে কিছু খাবার আপনাকে সজীবতা ও সুস্থতা দেবে। এবার জেনে নেব
সেই সব খাবারগুলোঃ
মধু বা গুড়ঃ
চিনি শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকর। চিনিকে বলা হয় সাদা বিষ। শীতের সময় চিনির বিকল্পে মধু বা গুড় ব্যবহান করুন। মধুতে প্রচুর পরিমান ভিটামিন, খনিজ পদার্থ ও অন্যান্য পুষ্টিগুণে ভরপুর থাকে। প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস পানির সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেয়ে নিন। এদিকে গুড়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আয়রন, যা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করবে।
স্যুপঃ
শরীর
সুস্থ রাখতে তরল জাতীয় পানি অনেক উপকারী। শীতে অনেকের পানি খাওয়ার পরিমান কমে যায়।
তাই শীতে গরম স্যুপ বা ঝোল জাতীয় খাবার খেতে অনেক মজা লাগে। যা আমদের শরীরে তরল খাবারে
ঘটতি কমাতে সাহায্য করে। ঠান্ডা ঠান্ডা আবহাওয়ায় গরম-গরম চুমুক। তাঈ শীতের বিকেলে বা
রাতের খাবারে ধোঁয়া ওঠা এক বাটি স্যুপ হলে কিন্তু মন্দ হয় না। এতে শরীর থেকে একটু হলেও
কাটবে ঠান্ডার রেশ কোমাবে এবং শরীর গরম করবে। শীতের সময় নানা সবজি, মুরগীর মাংস ও ডিম
দিয়ে স্যুপ বানিয়ে খেতে পারেন।
মূলজাতীয় সবজিঃ
শীতের রোগবালাই দূর করতে এ মৌসুমের মূলজাতীয় সবজি দারুণ কার্যকর। বিট, মিষ্টি আলু, গাজর, শালগমের মতো নানা সবজি শীতে আপনাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে। এসব সবজিতে থাকা ভিটামিন ও নানা পুষ্টি উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। এগুলো ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়াতে এবং খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এসব সবজি শীতকালে দেহের উষ্ণতা বাড়াতে সাহায্য করে।
টক ফলঃ
শরীরে ফাইবার বা আঁশের ঘাটতি মেটাতে ও ভিটামিন সির জোগান দিতে শীতের সময় বেশি করে টকজাতীয় ফল খেতে পারেন। কমলা, বরই, পেয়ারা, মালটা হতে পারে আপনার ভিটামিন সির দারুণ উৎস। পেয়ারায় অনেক বেশি ভিটামিন সি থাকে, যা অনেক বেশি প্রতিরোধক ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এতে আরও থাকে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম। তথ্য অনুযায়ী, বরইয়ে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামসহ আছে নানা কিছু। রোগ প্রতিরোধে যেমন ভূমিকা রাখে, অন্যদিকে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়িয়ে দেয়। বরই সবার জন্য ভালো হলেও ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য কিন্তু না।
পালংঃ
পালং শাক শীতকালীন শাক। সুতরাং শীতে বাজারে পালং শাক প্রচুর পাবেন। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও শীতে সুস্থ থাকতে পালং শাক অন্যতম ভুমিকা পালন করে। পুষ্টিতে ভরপুর পালংয়ের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ক্যানসারপ্রতিরোধী গুণের কারণে এটি ‘সুপারফুড’ হিসেবে পরিচিত। সবুজ পাতার এ শাক দ্রুত পেটের চর্বি কমাতে পারে। পালংয়ে ভিটামিন ও মিনারেল আছে, এতে ক্যালরি থাকে কম। তাই ওজন কমাতে খাবারে বেশি করে পালং রাখতে পারেন।
মাছঃ
আমরা মাছে ভাতে বাঙালী। আমাদের কাছে মাছ বা মাছ জাতীয় খাবার বরাবই মুখরচক ও সুস্বাদু লাগে। শীতে বেশি করে মাছ খান। আমিষের চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন দুই বেলা মাছ খেতে পারেন। তবে প্রতি সপ্তাহে অন্তত দুই দিন সামুদ্রিক মাছ খাদ্য তালিকায় রাখতেন পারেন। মাছ একটি ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার। এছাড়াও মাছে আছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড। মাছ আমাদের শরীরে বিভিন্ন গঠনে কার্যকারী ভুমিকা পালন করে। সুতরাং শীতের দিনে আমাদের খাদ্য তালিকায় মাছ রাখতে হবে।